বিজ্ঞান বিশ্বের খবর

ডারউইনের জীবন-সঙ্গিনীর ডায়েরি

প্রখ্যাত প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইনের স্ত্রীর লেখা ডায়েরি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে অনলাইনে১৯৩৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডারউইন বিয়ে করেন চিনামাটির প্রসিদ্ধ বাসনকোসন প্রস্তুতকারী ওয়েজউড পরিবারের কন্যা ও তাঁর আত্মীয় এমা ওয়েজউডকেএমার ঐকান্তিক ভালোবাসা, সহমর্মিতা, ধৈর্য, দৃঢ় চিত্ততা ক্রনিক রোগী ডারউইনের বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলএমা প্রথম ডায়েরি লেখা শুরু করেন ১৮২৪ সালেতখন তার বয়স ছিল মাত্র ষোল বছর এমার লিখিত ৬টি নোটবুকের মধ্যে তাদের পারিবারিক জীবনের অনেক অনালোকিত বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে

 

 

বিলুপ্তির পথে ভারতীয় বাঘ

১০০ বছর ভারতীয়রা বিশ্বাস করতেন যে, তাদের ভূখণ্ডে চল্লিশ হাজারের ও বেশি বাঘ রয়েছে; কিন্তু ভারতের ওয়ার্ল্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনালের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ইতোমধ্যে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে২০০২ সালে সংরক্ষণকর্মীরা জানিয়েছিলেন যে, ভারতে মাত্র ৩,৫০০টি বাঘ রয়েছেএ দেশে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলোÑ আবাস ধ্বংস করে মানববসতি তৈরি, মূল্যবান চামড়ার জন্য যথেচ্ছ শিকার করাগবেষকরা জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে মধ্যপ্রদেশ থেকেই বিলুপ্ত হয়েছে ৭১০টি বাঘসংরক্ষণকর্মীরা এই বিগ ক্যাট রক্ষার জন্য সরকারকে সঠিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন

 

 

নারিকেল তেল থেকে জ্বালানি!

জ্বালানি তেল অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদঅর্থাৎ এগুলো একবার উত্তোলন করার পর আর পুনরায় স্থাপন করা যায় নাঅথচ আজ এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যখন প্রাকৃতিক সম্পদের এ উপাদানের ওপর পুরো পৃথিবী নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেআর এ কথা বিবেচনায় রেখেই বহু বছর ধরে বিশেষজ্ঞরা বিকল্প জ্বালানি উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে আসছেনএ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন বিকল্প পথ বেরিয়ে এসেছেকেউ গাছের পাতা থেকে অথবা কেউ গাছের কন্দ থেকে বিকল্প জ্বালানি তৈরির প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন; কিন্তু পাপুয়া নিউগিনিতে ঘটেছে এক অন্য রকম ঘটনাজার্মান প্রকৌশলী ম্যাথিয়াম হোমস এক অকল্পনীয় কাজ করে বসলেনযে নারকেল তেল এতোকাল মানুষ মাথায় মালিশ করে এসেছে তা দিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি ডিজেল বানিয়ে ছাড়লেন! প্রথম প্রথম কেউ তার কথা বিশ্বাস না করলেও এখন অবশ্য রীতিমতো এ বিকল্প জ্বালানি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

 

 

মহাকাশে ভারতের দীপ্ত পদচারণা

মহাকাশ গবেষণা, অভিযান কার্যক্রম, রকেট উৎক্ষেপণ কর্মকাণ্ড, স্যাটেলাইট নির্মাণসহ মহাকাশ প্রযুক্তির বিভিন্ন অঙ্গনে ভারতের বলিষ্ঠ পরিকল্পনা ও দৃপ্ত পদচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছেঅন্যান্য ক্ষেত্রের মতো ভারত মহাকাশ ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক সফলতা বয়ে এনেছে এবং ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোএখন আর শুধু সরকারি বাজেটের ওপরই নির্ভর করছে না, তারা নিজেদেরও আয়ের পথ তৈরি করেছে এবং তা আন্তর্জাতিক বাজার থেকেইতাছাড়া উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তুলনামূলক স্বল্প ব্যয়ে তার ব্যবহারের সুবিধার কারণে বিশ্বের অনেক উন্নত মহাকাশ গবেষণাকারী রাষ্ট্রগুলো ভারতের সাথে মহাকাশ বিষয়ক চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছেএই চুক্তিগুলোতে বিদেশি মহাকাশ সংস্থাগুলো মহাকাশ বাণিজ্যের জন্য একটি বিষয়ের প্রতিই নজর বেশি দিচ্ছেন আর তা হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাগত ২৩ এপ্রিল ০৭ ভারত প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইতালির একটি এ্যাস্ট্রোনমি স্যাটেলাইট নিজস্ব লঞ্চিং ভেহিকলে উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে তার আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে, যা পৃথিবীর কক্ষপথে সফলভাবে অবস্থান নেয়

সম্প্রতি ইসরোআরো ৩টি বিদেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তাব পেয়েছে এবং এর ওপর একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছেতবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখনো কবে কোথা হতে এবং কোন কোন দেশের কি ধরনের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নিএকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোপ্রথমে নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে তারপর অন্যান্য দেশের সাথে মহাকাশ সহযোগিতা কিংবা ব্যবসায়িক যোগাযোগ তৈরি করবে আর সেক্ষেত্রে নিজস্ব প্রযুক্তিকেই বিশেষভাবে জোর দেয়া হবেভারতীয় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে মহাকাশ অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইউক্রেন এবং ইউরোপের সাথে প্রতিযোগিতা করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যেখানে বাৎসরিক প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন টাকার একটি সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছেবাণিজ্যিক কার্যক্রম ছাড়াও ইসরো তার মহাকাশ গবেষণা, অভিযান ও অন্যান্য প্রাযুক্তিক কর্মসূচি নিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে তারা আগামী ২০০৮ সালে মনুষ্যবাহী চন্দ্র অভিযানের জন্য চন্দ্রযাননামে একটি মহাকাশযান প্রস্তুত ও তার আনুমানিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে

ইসরোমহাকাশ কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৩ সাল থেকে এবং তখন থেকেই ভারত নিজস্ব উৎক্ষেপণযান বা রকেটের মাধ্যমে নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রস্তুত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে কাজ করে আসছিল১৯৬৩ সালের ২১ নভেম্বর তারা একটি সাউন্ডিং রকেট ও ১৯৭৫ সালে ১৯ এপ্রিল প্রথম ভারতীয় উপগ্রহ আরিয়াভাটার সফল উৎক্ষেপণ পরীক্ষা সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে বিশ্বে তাদের মহাকাশ শক্তির সামর্থ তুলে ধরেএরপর তারা নিয়মিতভাবে উন্নত স্যাটেলাইট লঞ্চিং ভেহিকল উদ্ভাবনের দিকে নজর দেয় এবং একে একে পিএসএলভি (মেরু পরিক্রমণ), জিএসএলভি (ভূ-কেন্দ্রিক), এসএসএলভি (অতিরিক্ত স্যাটেলাইট বহনকারী) প্রভৃতি উৎক্ষেপণের পাশাপাশি নানা ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা নির্মাণ করে১৯৮০ সালের ১৮ জুলাই তারা স্যাটেলাইট ভেহিকল এসএলভি-৩রকেটের মাধ্যমে রোহিণীউপগ্রহটি উৎক্ষেপণ ও তা পৃথিবীর কক্ষপথে সফলভাবে স্থাপন করতে সমর্থ হয়

 

 

সঙ্কটের মুখে এস্কিমোরা

বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু ও হিমালয়ের বরফ গলেই চলেছেএর ফলে বাড়ছে পানি, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য চরম সঙ্কটে পড়েছে তুন্দ্রা অঞ্চলের মানুষরাবরফ অঞ্চলে যারা বাস করে তাদেরকে বলা এস্কিমোবরফ গলে যাওয়ায় এস্কিমোরা তাদের আবাস নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেকারণ তাদের ঘরবাড়ি তৈরি হয় বরফ দিয়েইএই বাড়িকে বলা হয় ইগলুবর্তমানে মেরুবাসীরা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত

 

 

দুই ছায়াপথের সংঘর্ষ

আমাদের ছায়াপথের নাম মিল্কিওয়েআর আকাশপথের অগণিত ছায়াপথের মধ্যে এন্ড্রোমিডা নামক ছায়াপথটিই আমাদের সবচেয়ে কাছেরতাই এটি আমাদের প্রতিবেশী ছায়াপথ অনেকদিন থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কড়া নজরদারিতে এন্ড্রোমিডার গতি-প্রকৃতি পরিলক্ষিত হচ্ছিল এ ছায়াপথটি থেকে যে আলোকরশ্মি পৃথিবীকে ধরা পড়ে তার গতি এবং ক্রমাগত উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়ঘটনাটি ঠিক দূর থেকে ছুটে আসা একটি মোটরগাড়ির হেডলাইটের সাথে তুলনা করা যায়গাড়িটি দূর থেকে ক্রমাগত কাছে আসতে থাকলে এর থেকে আসা আলোকরশ্মির উজ্জ্বলতা যেভাবে বাড়তে থাকে ঠিক এ ধরনের ঘটনাই টেলিস্কোপে দেখেছেন বিজ্ঞানীরাএ ঘটনা দেখার পর তারা কবছর আগে হিসাব করেছিলেন যে, আর মাত্র ৫০০ কোটি বছর পর এ্যান্ড্রোমিডা মিল্কিওয়ের সাথে সংঘর্ষে পতিত হবে! অথচ এ সিদ্ধান্তের পর কম্পিউটার সিমুলেশন আর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইদানিংকালে তারা সম্পূর্ণ নতুন এক অংক কষে বসলেন৫০০ কোটি নয় আর মাত্র ২০০ কোটি বছর পরই সংঘর্ষ ঘটবে, এ দুটি ছায়াপথের! বিজ্ঞানীরা অবশ্য হিসাবটি করেই ক্ষান্ত হননিদুটি ছায়াপথের সামগ্রিক উপাদানগুলো (নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদি) কী প্রক্রিয়ায় মিলিত হবে বা সংঘর্ষটি কী পর্যায়ের হতে পারে তা নিয়ে এখন সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে আছেন

 

 

আজব প্রজাতি আবিষ্কার

সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের একটি দল এন্টার্টিকার গভীরে জমে থাকা বরফের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন আজব কিছু নতুন প্রজাতিএই অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্রধান বিজ্ঞানী জুলিয়ান গাট জানান, ‘আমরা যে আজব প্রাণীগুলো খুঁজে পেয়েছি তার মধ্যে অন্তত ৩০টি নতুন প্রজাতি১০ সপ্তাহ ধরে বিজ্ঞানীরা এ অঞ্চলটিকে গবেষণামূলক অনুসন্ধান চালানগবেষকরা আরো বলেন, জীবগুলোর ৯৫ ভাগই খুঁজে পাওয়া আদি বাসিন্দা এবং ৫ ভাগ বিভিন্ন মাধ্যমে এখানে এসেছেগবেষকরা জানান, ‘আবিষ্কৃত এই প্রজাতিগুলো আমাদের জীববৈচিত্র্যকে আরো সমৃদ্ধ করবেএন্টার্টিকার পেনিনসুলা অঞ্চলের উইডেল সাগরে খুঁজে পাওয়া নতুন প্রজাতিগুলো হলোÑ বিভিন্ন ধরনের অক্টোপাস, সি-লিলি, সি-কিউকিম্বারস, সি-স্কিউরিটস ও কারসটোস

 

 

বিরল প্রজাতির হাতির ফসিল

সাইবেরিয়ার জেলেরা সন্ধান পেয়েছেন বিরল প্রজাতির হাতির ফসিলখুঁজে পাওয়া এ ফসিলে হাতির মেরুদণ্ড, মাথার খুলি, দাঁতসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রায় অক্ষয় অবস্থায় ছিলগবেষকরা জানান, ষোলো লাখ বছর থেকে দশ হাজার বছর আগে এ প্রজাতির হাতি আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল দাঁপিয়ে বেড়াতোরাশিয়ার নভোসেলোভো জাদুঘরের উপ-পরিচালক আলেক্সান্ডার কারজেইভ জানান, ‘এটি একটি বিরল ঘটনাএতো বছর পর এই হাতিগুলোর কঙ্কাল পাওয়া আসলেই অবাক করার মতো বিষয়

 

গ্রন্থনা : নোমান মোত্তাকী, সৌরভ মাহমুদ ও

এম. মাইনুল ইসলাম

 
কুইজ
সায়েন্স ফিকশন
বিজ্ঞান প্রজন্ম
 বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা
স্বাস্থ্য ও চিকিত্সা
উদ্ভাবন
পরিবেশ
 সায়েন্স টুন
 কম্পিউটারজগত
 দেশের খবর
 প্রযুক্তি অনলাইন
 মনোবিজ্ঞান
 বিজ্ঞান বিশ্বের খবর
 অন্যান্য রচনা
 পার্শ্ব রচনা
 বিশেষ রচনা
হোমপেজ
 প্রচ্ছদ রচনা